সুবর্ণচরে ভোটের রাতে আলোচিত ঘটনা, যা ঘটেছিল সেদিন

পাঁচ বছর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। এছাড়া সদস্য রুহুল আমিনসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ১৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তারা নোয়াখালী জেলা কারাগারে রয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকে আসামি মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) পলাতক রয়েছে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন রাতে স্থানীয় রুহুল আমিনের নেতৃত্বে ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে স্বামী ও সন্তানরা।

ভিকটিম জানান, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সুবর্ণচর উপজেলায় তার ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে ১০-১৫ জন তাকে ঘিরে ধরে এবং তাদের পছন্দের প্রতীকে স্ট্যাম্প দিতে বলে। এ নিয়ে ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা তাকে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। ওই দিন রাত ১২টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত তাদের বাড়িতে গিয়ে তাকে, তার স্বামী ও চার সন্তানকে বেঁধে রাখে। এরপর দুর্বৃত্তরা তাদের মারধর করে বাড়ির পাশের পুকুরে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে।

মহিলার অভিযোগ, তারা কয়েকজনকে গলা কেটে হত্যা করতে চেয়েছিল। হাত-পা ধরে প্রাণ ভিক্ষা চাইলেও ভোর ৫টার দিকে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা না করে ছেড়ে দেয়। সকালে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ওই নারীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে চর জব্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নিহতের স্বামী জানান, ঘটনার পর থেকে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কয়েক জন মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতিদিন তাদের বাড়ির সামনে অনুশীলন করে। তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে খবর দেন। কিন্তু কার্যকর কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের নিরাপত্তাহীনতার কথা আমাকে কেউ বলেনি। তাদের অবশ্যই নিরাপত্তা দেওয়া হবে।